"হলুদ" খেলে কি পুষ্টিগত লাভ পাওয়া যায় ?
হলুদ হলো ভারতীয় রান্নার একটি বিশেষ প্রয়োজনীয়
উপাদান।একে "খাদ্য"
এবং
"ঔষধীয়" দুই
গোষ্ঠীতেই রাখা যায়। হলুদ
হলো "Food and Drug
Agency approved " । বিশ্বের 78
শতাংশ হলুদ ভারত এ উৎপন্ন হয়। হলুদ হলো খু উপকারী খাদ্য। হলুদ আমাদের অনেক উপকারে
আসে। হলুদ
শরীর কে সতেজ রাখে, পেটের
গ্যাস এর সমস্যা দূর করে। পেটের কৃমি নষ্ট করতে হলুদ কার্যকরী। মহিলাদের জন্য
মাসিক জনিত সমস্যা দূর করে। হজম শক্তি বাড়ায়, আর্থরাইটিস
নিরাময়ে সহায়ক, এছাড়াও হলুদ আরো অনেক উপকারে আসে। আজ
আমরা হলুদ এর গুনাগুন সম্বন্ধে আলোচনা করবো।
USDA এর গবেষণা অনুসারে এক চামচ হলুদ এ এর উপাদান গুলি হলো:-
এনার্জি- 29
ক্যালোরি
প্রোটিন- 1
গ্রাম
ফাইবার- 2
গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট- 6 মিগ্রা
ক্যালসিয়াম -8.2 গ্রাম
ফসফরাস-0.12 মিগ্রা
সোডিয়াম-0.06 মিগ্রাম্যাগনেসিয়াম-।
১৯ মিগ্রা
পটাসিয়াম-1.7
মিগ্রা
আইরন-2.4
মিগ্রা
জিংক-22.9 মিগ্রা
আয়ুর্বেদ
শাস্ত্রে এবং চাইনিজ মেডিসিন এ হলুদ এর প্রচুর ব্যবহার আছে। তাজা হলুদ এর মধ্যে যথেষ্ট
পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকে। হলুদ শরীরের ব্যাথা নিরাময়ে, ক্ষত নিরাময়ে, চর্ম রোগ সারাতে এবং লিভার এর রোগ
সারাতে ব্যবহৃত হয়।
1)গবেষণায়
দেখা গেছে আর্থরাইটিস এর ব্যাথা নিরাময়ে হলুদ খাওয়া এবং ব্যথাস্থানে প্রলেপ দেওয়া
উপকারী।
2)হলুদ
এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভার কে টক্সিন পদার্থের প্রভাব থেকে মুক্ত
রাখতে সাহায্য করে।
3)হলুদ
এর মধ্যে থাকা "কারকিউমিন" ক্যান্সার রোগের প্রতিরোধক হিসাবে কাজ
করে।
4)হলুদ
পাকস্থলীর হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
5)হলুদ
রক্ত কে পরিশ্রুত করে, রক্তকণিকা গঠনে সহায়তা করে এবং রক্তে কোলেস্টেরল এবং রক্ত চাপ
নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
হলুদ
গায়ের চামড়া ফেটে যাওয়া রোগ কে নিরাময়ে সাহায্য করে।
হলুদ
এর মধ্যে থাকা কারকিউমিন শ্বেত চর্ম রোগ নিরাময়ে সহায়ক। কারকিউমিন চর্মের মেলানিন
রঞ্জক দের সতেজ করে এবং স্বেত চর্ম রোগ কে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ।
হলুদ
খেলে এবং মুখে লাগালে মুখের ব্রণ ফুসকুড়ি ইত্যাদি সারতে সাহায্য করে।
হলুদ
এর মধ্যে থাকা কারকিউমিন ফ্যাট সঞ্চয়কারী কোষদের ধংশ করে। তাই হলুদ দেহের ওজন
কমাতে সহায়ক।
হলুদ
দেহের পিত্ত উৎপাদন প্রক্রিয়া কে সতেজ রাখে।
হলুদ
ক্ষত লিভার সারাতে সাহায্য করে।
হলুদ
শরীরের ইন্সুলিন উৎপাদনে সাহায্য করে ,ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
সহায়ক।
হলুদ
এ থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্র কে সুস্থ রাখে।
হলুদ
এর মধ্যে থাকা কারকিউমিন ফুসফুস জনিত রোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়ক।
হলুদ
চোখের দৃষ্টি শক্তি কে দীর্ঘায়িত করে। নিয়মিত হলুদ খেলে চোখে ছানি পড়তে বাধা
দেয়।
হলুদ
এর মধ্যে এন্টিফাঙ্গাল, এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিভাইরাল গুন্ থাকায় বহিঃসংক্রামণ জনিত
রোগ থেকে রক্ষা করে। চামড়া সতেজ রাখে, দেহের ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
সাবধানতা:-
হলুদ
রক্ত কে পাতলা করে। তাই রক্ত পাতলাকারী ওষুধ এসপিরিন এর মতো ওষুধ খেলে সঙ্গে হলুদ
খাবেন না।
হলুদ
যেহেতু রক্ত কে পাতলা করে তাই দেহে কোনো অপারেশন হওয়ার থাকলে ২ সপ্তাহ আগেই হলুদ
খাওয়া ছেড়ে দেবেন। নাহলে অপারেশন কালে রক্তপাত বেশি হবে।
প্রতিদিন আধা থেকে দেড় চামচ গুঁড়ো হলুদ খাওয়া দরকার । প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ২৫০ মিগ্রা কারকিউমিন প্রয়োজন হয়। সকল বেলা হলুদ খাওয়া ভালো অথবা রাত্রে ঘুমোনোর আগে কিছু খেয়ে হলুদ খাওয়া ভালো, খালি পেটে নয়। আর যদি ব্যাথা নিরাময়ের জন্য কারকিউমিন এক্সট্রাক্ট ট্যাবলেট খান তাহলে প্রতিদিন 500-1000 মিগ্রা ট্যাবলেট খেতে হবে (ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী।) ।
গর্ভবতী মহিলা রা মাত্রাধিক হলুদ খাবেন না এতে গর্ভের ক্ষতি করতে পারে।
গল
ব্লাডার এ স্টোন থাকলে হলুদ বেশি খাবেন না।
মাত্রাধিক
পরিমানে হলুদ খেলে পুরুষ দেহে টেস্টোস্টেরোন লেভেল কমে যায় ফলে শুক্রাণুর সঞ্চালন
ক্ষমতা কমে যায়।
মাত্রাধিক
পরিমানে হলুদ খেলে দেহে আয়রন সঞ্চয়ে বাধা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন মাত্রাধিক হলুদ খেলে
রক্তাল্পতা হতে পারে।
কিভাবে খাবেন:-
হলুদ
শাকসবজির সঙ্গে, তরকারির
সঙ্গে মশলা হিসাবে মিশিয়ে খাওয়া যায় অথবা দরকারে শুধু হলুদ চিবিয়ে ও খাওয়া যেতে
পারে। গুঁড়ো হলুদ এর ক্যাপসুল ও পাওয়া যায়।
হলুদ
কে চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে, অথবা দুধের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যেতে
পারে।
উপরের এই তথ্য ভালো লাগলে এবং উপকারী মনে হলে অবশ্যই Like এবং Share করুন।
আরো পড়ুন:- "হলুদ" প্রতিদিন খেলে কি উপকার হবে ? , "কলা" প্রতিদিন কেন খাওয়া দরকার?
গম খেলে কি কি পুষ্টিগত উপকার পাওয়া যায় ? , "চীনাবাদাম কেন খাওয়া দরকার ?
ছোলা(চানা) প্রতিদিন কেন খাওয়া দরকার ? , "গুড়" প্রতিদিন কেন খাওয়া দরকার?
"ভাত "খেলে কি পুষ্টিকর উপকার পাওয়া যায় ? , "আপেল" খেলে কি উপকার হয়?
For Motivational Articles In English visit..... www.badisafalta.com
For Motivational Articles In Bengali visit..... www.swarojgarvikash.com
0 Comments