"ভাত" খেলে কি পুষ্টিগত লাভ হয় ?
আজ আমরা "ভাত" এর গুনাগুন সম্বন্ধে আলোচনা করবো। "চাল" কে সেদ্ধ করে ভাত তৈরি হয়।
চাল দুই ধরনের হয় :-
1) ঢেঁকি ছাঁটা চাল,
2) সাদা চাল।
এই দুই ধরনের চালের মধ্যে ঢেঁকি ছাঁটা চালের মধ্যে লাল খোসা টা লেগেই থাকে। আর সাদা চালের মধ্যে সেই লাল খোসা থাকে না, সেটাকে ছেঁচে ফেলা হয়। স্বাস্থ্যের লাভের দিক থেকে ঢেঁকি ছাঁটা চালে বেশি উপকার পাওয়া যায়, কারণ ওই লাল খোসার মধ্যে উপকারী ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে।
ঢেঁকি ছাঁটা চালের পুষ্টিগত উপাদান গুলি হলো :-
ঢেঁকি ছাঁটা চালের উপকারিতা :-
ঢেঁকি
ছাঁটা চালের মধ্যে সাধারণত কার্বোহাইড্রেট, এবং প্রোটিন থাকে, ফ্যাট
খুব হালকা পরিমানে থাকে, বা নাই বললেই চলে। চালের মধ্যে
বেশির ভাগ কার্বোহাইড্রেট স্টার্চ জাতীয়।
এটা হলো লম্বা চেইন এর গ্লুকোজ যাকে এমাইলোজ
এবং এমাইলোপেক্টিন বলা হয়। চালের ধরণ অনুসারে কিছু চালের মধ্যে এমাইলোজ কম
থাকে এবং এমাইলোপেক্টিন বেশি থাকে। এমন চাল সেদ্ধ করলে আঠালো ধরনের হয়, ফুরফুরে ভাত থাকে না। এই ধরনের চালের
ভাত খেলে হজম করতে কম সময় লাগে। অন্যদিকে
যে চালে এমাইলোপেক্টিন কম থাকে এবং এমাইলোজ বেশি থাকে সেই চাল ফুরফুরে হয়।এই চালের
ভাত খেলে হজম করতে বেশি সময় নেয়। সেই জন্য ফুরফুরে ভাত ডায়াবেটিস রোগীর খাওয়া ভালো
এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স আঠালো ভাতের তুলনায় কম এবং সুগার লেভেল তুলনামূলক ভাবে
ধীরে ধীরে বাড়ে।
ফাইবার:-সাদা চালে সাধারণত অদ্রবণীয় ফাইবার
হেমিসেলুলোজ থাকে।দ্রবনীয় ফাইবার প্রায় থাকে না।
ঢেঁকি
ছাঁটা চালে অদ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যার
নাম রেসিস্টেন্ট স্টার্চ। এই রেসিস্টেন্ট স্টার্চ গুড় বেড় ফাঙ্কশন সৃষ্টি করে এবং
হজম ধীরে ধীরে হয়, যার ফলে শরীরে শর্করার পরিমান ধীরে
ধীরে বাড়ে। এই জন্য ডায়াবেটিস রোগীর জন্য
ঢেঁকি ছাঁটা চাল এর ভাত খাওয়া ভালো।
ঢেঁকি
ছাঁটা চালে থাকা "Butyrate" পাকনালীর অন্ত্র কে সুস্থ রাখে। অন্ত্রের জ্বালা কে
নিরাময় করে। এবং মলাশয়ের ক্যান্সার হওয়া থেকে রক্ষা করে। দেহে শক্তি তৈরি করা এবং
সাধারণ উপাদান গুলি বাদ দিলে সাদা চালের
মধ্যে আর কোনো বিশেষ গুন্ নেই, অথচ ঢেঁকি ছাঁটা চালের মধ্যে অনেক পৌষ্টিক গুন্
আছে।
ঢেঁকি
ছাঁটা চাল রাখতে কোলেস্টেরল এর মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগ থেকে
রক্ষা করে।ঢেঁকি ছাঁটা চালের মধ্যে খনিজ পদার্থ, এন্টিঅক্সিডেন্ট, লিগন্যান
এবং ডায়েটারি ফাইবার থাকে।
লিগন্যান
হলো এমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা স্তন ক্যান্সার, হারের দুর্বলতা, হৃদরোগ
ইত্যাদি রোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়ক।
ঢেঁকি
ছাঁটা চালে ফেরুলিক অ্যাসিড থাকে যা গা জ্বালা করা, ক্যান্সার, এবং ডায়াবেটিস এর মতো রোগ থেকে রক্ষা
পেতে সাহায্য করে।
সাবধানতা
:-
1) আর্সেনিক এবং মার্কারি যুক্ত দূষিত
মাটির থেকে চাষ করা ধানের ঢেঁকি ছাঁটা চাল খাবেন না। কারণ চালের ওই লাল খোসায়
আর্সেনিক এবং মার্কারি জমে যায়।
2) ঢেঁকি চাঁটা চালের মধ্যে ফাইটিক অ্যাসিড
নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরে আয়রন এবং জিংক শোষণে বাধা দেয়।এই ফাইটিক অ্যাসিড এর পরিমান কম করতে হলে
রান্না করার আগে চাল কে ভিজিয়ে
রাখতে হবে তার পর ভালো করে কচলে ধুতে হবে, এরপর রান্না করতে হবে।
উপরের এই তথ্য ভালো লাগলে এবং উপকারী মনে হলে অবশ্যই Like এবং Share করুন।
আরো পড়ুন:- "হলুদ" প্রতিদিন খেলে কি উপকার হবে ? , "কলা" প্রতিদিন কেন খাওয়া দরকার?
গম খেলে কি কি পুষ্টিগত উপকার পাওয়া যায় ? , "চীনাবাদাম কেন খাওয়া দরকার ?
ছোলা(চানা) প্রতিদিন কেন খাওয়া দরকার ? , "গুড়" প্রতিদিন কেন খাওয়া দরকার?
"ভাত "খেলে কি পুষ্টিকর উপকার পাওয়া যায় ? , "আপেল" খেলে কি উপকার হয়?
For Motivational Articles In English visit..... www.badisafalta.com
For Motivational Articles In Bengali visit..... www.swarojgarvikash.com
0 Comments